Why share market is not getting well in Banglades?

শেয়ার বাজারকে কোনভাবেই ঠেলে, ধাক্কা দিয়ে, চ্যাংদোলা করে তোলা যাচ্ছে না। যাবার কথাও না। খামাখাই টানা হেঁচড়া!

শেয়ার বাজার হচ্ছে জনগণের বিনিয়োগ করার ক্ষেত্র। এখানে বিনিয়োগকারীরা আসবেন স্বেচ্ছায় বিনিয়োগ করতে। কাউকে অনিচ্ছার জায়গায় জোর করে নিতে গেলে যা হয়। শেয়ার বাজারে তাই হচ্ছে। বিভিন্ন রকমের উৎসাহ, উদ্দীপনা, প্রণোদনা, উৎকোচ ....... কত কিছুইতো দেয়া হল। বাজারতো চড়ে না। চড়বেই বা কেন? চড়ার কারণ আছে না-কি? না নেই। গত প্রায় ৩০ বছর ধরে শেয়ার বাজারের চড়াই উৎরাই দেখে আসছি। এই দীর্ঘ সময়কালে কখনো মনে হয়নি যে শেয়ার বাজার ঠিকভাবে চলছে বা চালানো হচ্ছে।

ঠিকভাবে চালানো বা চলা বলতে কি বুঝি? শেয়ার বাজার হচ্ছে মূলধন বাজার। এখানে ছোট, মাঝারি, বড় – সব রকমের বিনিয়োগকারীরা যার যার সঞ্চয় নিয়ে আসবেন সে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করতে যার বিনিয়োগ করার সুযোগ এবং শক্তি রয়েছে কিন্তু মূলধনের ঘাটতি আছে। কথাটা লক্ষ্য করুন - যার বিনিয়োগ করার সুযোগ এবং শক্তি রয়েছে কিন্তু মূলধনের ঘাটতি আছে। শুধু নামডাক ওয়ালা কোম্পানি হলেই বিনিয়োগ করা উচিৎ নয়। অন্যদিকে কে বিনিয়োগ করবে? এ প্রশ্নের উত্তরও সহজ নয়। বিনিয়োগ করবেন তিনি যার নিজের বিনিয়োগ করার সুযোগ বা শক্তি নেই কিন্তু সঞ্চয় রয়েছে। যেমন চাকরিজীবী, অবসরগ্রহণ করা ব্যাক্তি, ছাত্র, গৃহিণী, ইত্যাদি।

সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হাতে যে পরিমাণ অলস সঞ্চয় আছে তা যেন অলস না থাকতে পারে তার সুব্যবস্থা করার জন্যই শেয়ার বাজার। উদ্যোগী এবং যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যাক্তিরা নতুন নতুন পণ্য বা সেবা সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাবে না পরেন তার জন্যই শেয়ার বাজার। যোগ্যমানুষদের সামাজিক সঞ্চয় দিয়ে এগিয়ে যাবার প্রেরণা দেবার জন্যই শেয়ার বাজার। এতে লাভ দুপক্ষেরই। বিনিয়োগকারী কিছুটা ঝুঁকি নিচ্ছেন বলে ব্যাংকগুলোর দেওয়া সুদের চেয়ে মুনাফার পরিমাণ বেশি আশা করবেন আবার বিনিয়োগকারীও তুলনামূলক কম খরচে মূলধন পেয়ে যাচ্ছে। মধ্যস্বত্তভোগী, টাউট বাটপারদের জন্য শেয়ার বাজার নয়।

শেয়ার বাজারে প্রধানত দুটি পক্ষ রয়েছেঃ বিনিয়োগকারী এবং ব্যবস্থাপনা পরিষদ। বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক কখনো মূল পক্ষ নয়। আদর্শ ব্যবস্থায়ঃ শেয়ার বাজার থেকে টাকা তুলে ব্যবস্থাপকেরা সে টাকা দিয়ে কোম্পানির বৃদ্ধির জন্য, উন্নতির জন্য কাজ করবেন। বছর শেষে ব্যবস্থাপকেরা মালিকদের কাছে আয়-ব্যয়, সম্পদ-দায়ের হিসাব বুঝিয়ে দেবেন। এখানে বেশিরভাগ শেয়ারের মালিকদের (পরিচালকদের) ভূমিকা গৌণ। কারণ পরিচালকেরা কোম্পানির দৈনন্দিন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন না, ব্যবস্থাপকেরা করেন। পরিচালকেরা বছরে কয়েকটি মিটিং করে ব্যবস্থাপকদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন। এমনটাই হওয়া উচিৎ।

অডিট রিপোর্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী আর ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগক্তাদের মাঝখানে সেতুর ভূমিকা পালন করেণ অডিটর। শেয়ার বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তৈরি হবে তখনই যখন তারা নির্ভরযোগ্য অডিট রিপোর্টে কোম্পানির সঠিক চিত্র দেখতে পাবেন। দেশে যথেষ্ট ভাল ভাল আইন আছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রের মত এ ক্ষেত্রেও সেসবের কার্যকর প্রয়োগ নেই।

যতদিন অডিট রিপোর্টের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা, নির্ভরতা না বাড়বে ততদিন শেয়ার বাজারে সুস্থবুদ্ধির মানুষ বিনিয়োগ করতে যাবে না। তারা ব্যাংকে টাকা জমাবে, শেয়ার বাজারে জুয়া খেলতে যাবে না। আমাদের দেশে বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ যেহেতু শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ না করে ব্যাংকে টাকা রাখে তাই ব্যাংকিং সিস্টেম থেকে টাকা শেয়ার বাজারে চালান করে বাজার চাঙ্গা করার একটা প্রবণতা কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে দেখা যায়। ব্যাংকের টাকা শেয়ার বাজারে চালান করার ব্যর্থ চেষ্টা করে শেয়ার বাজারকে স্থিতিশীল করা যায়নি, যাবে না। বাস্তবে হওয়া উচিৎ ঠিক উল্টোটা। শেয়ার বাজার থেকে ব্যাংকগুলো মূলধন সংগ্রহ করবে; ব্যাংক থেকে বাজারে যাবে না।

৩০ বছর ধরে দেখছি, উল্টো-পাল্টা ঔষধ দিয়ে শেয়ার বাজারকে দিন দিন রুগ্ন করে ফেলা হয়েছে। এখন আর কোরামিনও কাজ করছে না। যদিও ২০১৫ সালে বেশ কিছু সঠিক আইনি সংস্কার হয়েছে; গত বছর ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বাজারে আসার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আইন পাশ হয়েছে নিকট ভবিষ্যতে যা কার্যকর হবে। তথাপি বলা যায়, শেয়ার বাজারকে স্বাভাবিক করার জন্য যথেষ্ট কাজ কখনো হয়নি। শুধু ভাল আইন থাকলেই হবে না। আইনের কার্যকর প্রয়োগ দেখতে চাই। সরকারসহ সংশ্লষ্টিদের একটা সম্মিলিত সঠিক উদ্যোগ চাই। শেয়ার বাজার সুস্থ করে তোলার জন্য একটা জাতীয় কমিটি চাই যার সদস্যরা হবেন এমন একেকজন উদ্যোগী মানুষ যিনি পাহার-পর্বত, নদী-সাগর তুল্য বাঁধা-বিপত্তি পেড়িয়ে শেয়ার বাজারকে সুস্থ করে তুলতে পারবেন।

শেয়ার বাজার থেকে দূর্বৃত্ত এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে অসৎ ব্যবসায়ীদের বিতারণ করতে না পারলে শেয়ার বাজার শুধু ধান্ধাবাজ, টাউট, বদমাশদের আখড়া হয়েই থেকে যাবে; সুস্থ বুদ্ধির মানুষেরা সেখানে যাবে না। সুস্থবুদ্ধির মানুষেরা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ না করলে ব্যবসা, বাণিজ্য আগাবে না, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি থেমে যাবে; ৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন অধরা রয়ে যাবে।

Comments

Popular posts from this blog

Facts about being actuary !

জমির খতিয়ান কি কত প্রকার ও কি কি?

How to Run C and C++ Program in Sublime Text