Onion crisis in Bangladesh!!!
পেঁয়াজ প্রসঙ্গ:
বাংলাদেশে সরকারি পরিসংখ্যান কতটুকু নির্ভরযোগ্য?
সরকারী পরিসংখ্যান মতে এ বছর বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা সর্বমোট ২৪ লাখ মেট্রিক টন। সরকারের হিসাব মতে, এ বছরে সারা বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৩.৩০ মেট্রিক লাখ টন।
উপরের তথ্য পর্যালোচনা করলে মাত্র ৪% অর্থাৎ ছিয়ানব্বই হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির প্রয়োজন ছিলো। অথচ সরকারি হিসাব মতে এরমধ্যেই এই বছরে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১১ লাখ টন, মানে সর্বমোট আমদানি চাহিদার ১১ গুনেরও বেশী।
এখন প্রশ্ন হলো মাত্র ৪% আমদানি নির্ভরশীল একটা পণ্যের মূল্য যাইহোক না কেন, সেই পণ্যের মূল্য প্রায় ১০ গুন দাম বাড়ে বাড়তি মূল্যে কি কারনে বাজারে বিক্রি হচ্ছে? অবাক করা ব্যাপার হল, এ পর্যন্ত যে পরিমাণে আমদানি হয়েছে তাতে ১০ লাখ টন উদ্বৃত্তে বাজার ভেসে যাওয়ার কথা।
ভারতের মহারাষ্ট্রে কৃষকের কান্নার ভিডিও ফুটেজ গতকালই পোস্ট করেছি। বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ার কারনে এবং এ বছর পেঁয়াজের ফলন বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে মাত্র আট রূপি বা বাংলাদেশী নয় টাকা চৌচল্লিশ পয়সা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকেরা। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি কারকরা হঠাৎই বাংলাদেশের পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধ হওয়ার কারণে ইতিমধ্যে নতুন রপ্তানী বাজার অন্বেষণে নেমে মালদ্বীপে পেঁয়াজ রপ্তানী শুরু করেছেন।
একটি গল্পের অবতারনা করছি, যেটি অনেকেরই জানা। সাধুর ছেলের জন্যে বাম্মন অষ্টাদশী সুন্দরী পাত্রী দেখতে গিয়ে, পাত্র পক্ষের আইনজীবী কাকাবাবু জানতে চাইলেন, পাত্রের কোন খারাপ অভ্যাস আছে কি না? উত্তরে ঘটক নরেন্দ সাহা জানালেন, "তেমন কিছুই নয়, ছেলে একটু পেঁয়াজ খায়।" কাকা বাবু ভিষন অবাক। পাশেই ছিলেন পাত্রীর খুড়ো মশাই দেশের জাদরের ডিআইজি। ওনি কিছুটা রাগান্বিত স্বরে জানতে চাইলেন, "কি বলেন মহাশয়, সাধুর ছেলে পেঁয়াজ খায়?" ঘটক কাঁচুমাচু করে উত্তর দিলেন, "বাবুজী উনি সব দিন খান না, যেদিন মাংস খান, ঐ দিনই শুধু পেঁয়াজ খান।" একথা শুনে সকলের মাথায় বাজ পড়ার উপক্রম। ছোট পিসা ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনের বিচারপতি, তিনি ঘটকের কাছে তার বিচারিক জিজ্ঞাসার সুরেই জানতে চাইলেন, "খুলে বলুন তো ঘটক মহাশয় সাধুর ছেলে মাংস খায়?" ঘটক এবার সুর নরম মোলায়েম করে বললেন, "আসলে অমন কিছু না, উনি সপ্তাহে মাত্র ছয় সাত দিন দারু খেয়ে গণিকালয়ে যান, আর ঐ রাত গুলোতেই মউজ মাস্তি ফুর্তি করতে গিয়েই একটু আধটু পেঁয়াজ খান।
আমি বিশ্বাস করি না সাধুর ছেলে পেঁয়াজ খেতে শুরু করার কারনেই পেঁয়াজের দাম হঠাৎই সকল পরিসংখ্যানকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আড়াই শত টাকা কেজিতে কোথাও কোথাও আজ বিক্রি হচ্ছে। বড় বড় মানুষরা পেঁয়াজ নিজে খান না এবং অন্যদের খেতে বারণ করছেন। যদিও তাদের রান্না ঘর দেখতে চাওয়া তো দূরের কথা, এর বিপরীতে টু শব্দটি করার মত তাবৎ রাষ্ট্রের গহীন জঙ্গলে একজন পুরুষ মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা তা অনেকের কাছেই সন্দেহজনক মনে হতে পারে। কূটনীতি, পররাষ্ট্র নীতি, বানিজ্য নীতি, ভূগোল, পৌরনীতি সকল হিসাব নিকাশ যোগ বিয়োগ ব্যার্থ করে পূর্বাপর সব ভুলে আমরা পেঁয়াজ বন্ধনাতে ব্যাস্ত। সরকারের অনেক কিছুর মতোই অতি সুযোগ্য মন্ত্রী ও কর্তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই সামান্য পেঁয়াজের বাজার। দেশে কোথায় কোথায় তৈরী হল এত বড়ো গণিকালয়, যেখানে অগুনিত সাধুর ছেলের পতিতা নিয়ে মাংস ভক্ষণ আর মদ পানের কারনেই আজ পেঁয়াজের আকাল, তাই বা বিশ্বাস করি কি করে?
সমস্যা তাহলে কোথায়???
সমস্যা তাহলে কোথায়???
Comments
Post a Comment